সেতু ভেঙে পড়ায় পাঁচ হাজার মানুষের ৬ কিলোমিটার পথ ঘুরতে হচ্ছে

পিরোজপুর সদর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আফাজ উদ্দিন খালের ওপর নির্মিত লোহার সেতুটি গেল বছরের ২৫ ডিসেম্বর রাতে ভেঙে পড়ে। এটি সংস্কার না করায় তিনটি গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এরপর থেকে ওই তিন গ্রামের বাসিন্দাদের প্রায় ছয় কিলোমিটার পথ ঘুরে জেলা সদরে যেতে হচ্ছে।
জেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালে বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আফাজ উদ্দিন খালের ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতুটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৭০ ফুট। এর ওপর দিয়ে বাঁশবাড়িয়া, দক্ষিণ বাঁশবাড়িয়া ও বাদুরা গ্রামের পাঁচ হাজার লোক সদর উপজেলাসহ জেলা শহরে যাতায়াত করে থাকে।
তিন বছর আগে বালুবাহী একটি ট্রলার খাল দিয়ে যাওয়ার সময় সেতুর সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে সেতুটির অবকাঠামো দুর্বল হয়ে পড়ে।
২০১৭ সালের জুলাই মাসে সেতুটির উত্তর অংশ ভেঙে পড়ে। এরপর থেকে স্থানীয় লোকজন সেতুর ভাঙা দুই অংশে বাঁশ দিয়ে সাঁকো তৈরি করে কোনোরকমে চলাচল করতো। গেল বছরের ২৫ ডিসেম্বর সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর একবারেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এরপর থেকে তিন গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার বাসিন্দাদের ছয় কিলোমিটার পথ ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে।
এছাড়া মধ্য বাঁশবাড়িয়া গ্রামের শতাধিক শিশুকে চরম কষ্ট করে খালের ওপারে বাঁশবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করতে হচ্ছে। অন্যদিকে দক্ষিণ বাঁশবাড়িয়া ও বাদুরা গ্রামের বাসিন্দাদের সাঁকোটি পাড় হয়ে জি-হায়দার মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হাট-বাজার, হাসপাতাল ও জেলা সদরে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
জি-হায়দার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র আব্দুল্লাহ আল মুবিন জানান, আফাজ উদ্দিন খালের ওপর নির্মিত সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় ছয় কিলোমিটার ঘুরে সংকরপাশা গ্রামের এ কে এম এ আউয়াল ফাউন্ডেশনের সামনের সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে করে প্রায় দুই মাস ধরে আমাদের দুর্দশার শেষ নেই।
সংকরপাশা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুল হালিম মৃধা জানান, সেতুটি মেরামত করতে ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু বরাদ্দ না থাকার কারণে সেতুটি মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না।
জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কর্মকর্তা আ. ছাত্তার বলেন, এলজিইডি এখন আর লোহার সেতু নির্মাণ করছে না। পুরাতন লোহার সেতুগুলো মেরামতের জন্য বরাদ্দ নেই। আমরা এই খালে গার্ডার সেতু নির্মাণের জন্য শিগগিরই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠাব।