বিশ্বজুড়ে হেরোইন ও আফিমের সিংহভাগের জোগান যায় আফগানিস্তান থেকে। দেশটির অর্থনীতিও অনেকাংশে মাদক উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের ওপর নির্ভরশীল। এর নিয়ন্ত্রণ ধীরে ধীরে চলে গেছে তালেবানের হাতে। মাদকের যুদ্ধে তালেবানকে পরাস্ত করতে যুক্তরাষ্ট্র বিশাল কর্মপরিকল্পনা হাতে নিলেও মাঝপথে বন্ধ হয়ে গেছে তা। এতে তালেবানের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের নতিস্বীকার করার সমূহ সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
সারা বিশ্বের মোট হেরোইনের ৯০ শতাংশ আফগানিস্তান থেকে আসে। হেরোইন উৎপাদন ও আফিম চাষের জন্য নিরাপত্তা দেয় জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবান। আফগানিস্তানের শাসনব্যবস্থা থেকে উৎখাত হওয়ার পর টিকে থাকার প্রশ্নে মাদক ব্যবসায় মনোযোগ বাড়িয়েছে তালেবান। কারণ, মাদক ব্যবসায় উপার্জন বিপুল। সেই অর্থ ব্যয় হচ্ছে তালেবানের অস্ত্র কেনা ও সক্ষমতা বাড়ানোর কাজে। ফলে জঙ্গিগোষ্ঠীটির শক্তিমত্তা হ্রাসে সফল হতে পারছে না আফগান সরকার ও মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর এক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আফগানিস্তানের মাদক উৎপাদনে বাধা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কটি সরকারি প্রতিষ্ঠান এক বিস্তৃত কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছিল। বছরের পর বছর ধরে এ নিয়ে কাজ করা হয়, সফলতাও আসে। কিন্তু সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসন হুট করেই এই কাজ স্থগিত করে দেয়। এতে করে এক অর্থে বিনা বাধায় এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় তালেবানের নিয়ন্ত্রণাধীন মাদক উৎপাদনের কাজ। বলা হচ্ছে, ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি করার আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার জন্যই মাদকবিরোধী কর্মপরিকল্পনা বন্ধ করে দিয়েছিল ওবামা প্রশাসন। কারণ, ইরানের মিত্র ও লেবাননভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ তালেবানের মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল। পরমাণু চুক্তির বিপরীতে হিজবুল্লাহকে ছাড় দেওয়ার জন্যই মাদকবিরোধী অভিযান বন্ধ করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র।