প্রযুক্তির কারণে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে যে সাতটি পেশা

মানুষের জীবনকে সাবলীল করে তুলতেই প্রযুক্তির আবিষ্কার। অন্যভাবে বললে আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে আজ মানুষের জীবন অনেক সহজ হয়ে গেছে। প্রযুক্তির উত্কর্ষে দিন দিনই উন্নত হচ্ছে মানুষের জীবন। আজকাল অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবহূত হচ্ছে রোবট প্রযুক্তি।
রোবট এমনই এক ‘করিত্কর্মা’
যে কিনা একাই একসঙ্গে শত মানুষের কাজ করে দিতে সক্ষম। কিন্তু প্রযুক্তির এই
উত্কর্ষই মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে। গবেষক জন পুগলিয়ানো বলেছেন, প্রযুক্তির অগ্রগতির
কারণে ভবিষ্যতে অন্তত সাতটি পেশা হুমকিতে পড়বে। তার মতে, এটি একই সঙ্গে পৃথিবীর সব
জায়গায় না ঘটলেও অন্তত উন্নত দেশগুলোতে এই আশঙ্কা সত্যি হতে পারে। যদিও এ মুহূর্তে
এসব পেশাকে নিরাপদই মনে করা হচ্ছে।
বিবিসি মুণ্ডু ও বিবিসি
স্প্যানিশ সার্ভিসকে তিনি বলেন, চিকিত্সক ও আইনজীবীরা কখনোই হারিয়ে যাবেন না।
কিন্তু শ্রম খাতের একটি বড় অংশই আর থাকবে না। পুগলিয়ানোর মতে,প্রযুক্তির কারণে
ক্ষতির মুখে পড়তে পারে এমন সাতটি পেশা হচ্ছে—চিকিত্সা, আইনজীবী, স্থপতি,
হিসাবরক্ষক, যুদ্ধবিমানের পাইলট, পুলিশ ও গোয়েন্দা, রিয়েল এস্টেট এজেন্ট। চাহিদা
থাকবে কেবল সৃষ্টিশীল কাজের।
চিকিত্সক: এটা ঠিক যে, চিকিত্সকদের চাহিদা সব সময় থাকবে। এমনকি বিশ্বে
বয়স্কদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার প্রবণতার মধ্যেও। কিন্তু পুগলিয়ানো বিশ্বাস করেন এ
খাতে কিছু জায়গায় লোকবল হুমকির মুখে পড়বে প্রযুক্তির কারণে। কারণ ভবিষ্যত্
দিনগুলোতে রোগ চিহ্নিতকরণে দাপট বাড়বে প্রযুক্তির।
আইনজীবী: পুগলিয়ানোর মতে, ডকুমেন্ট প্রসেসিং কিংবা নিয়মিত কাজের জন্য
ভবিষ্যতে দরকার হবে অল্প আইনজীবী বা সলিসিটরের। বিশেষজ্ঞ জ্ঞানের খুব বেশি দরকার
হবে না কম্পিউটার সফটওয়্যারের কারণে।
স্থপতি: ভবনের নকশা তৈরির কাজে এখনি সফটওয়্যার নিজেই সক্ষম হয়ে উঠেছে।
আর ভবিষ্যতে এটি আরো জোরদার হবে। একমাত্র সৃষ্টিশীল স্থপতিরাই হয়ত তখন টিকে থাকতে
পারবে।
হিসাবরক্ষক: ট্যাক্সের জটিল সব হিসাব নিকাশের জন্য ভবিষ্যতে আর হয়ত হিসাব রক্ষকের
দরকার হবে না। কেনই বা দরকার হবে? চাহিদাই তো কমে যাবে। কারণ কাজগুলো তো করবে
কম্পিউটার আর সফটওয়্যার।
যুদ্ধবিমানের পাইলট: এখনই বড় বড় যুদ্ধের জন্য বিভিন্ন দেশ পাইলটবিহীন যুদ্ধবিমান
ড্রোন ব্যবহার করতে শুরু করেছে। ভবিষ্যতে হয়ত যুদ্ধ বিগ্রহের মতো কাজগুলোর জন্য পুরোপুরিই
মানুষ নির্ভর করবে প্রযুক্তির ওপর।
পুলিশ ও গোয়েন্দা: আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সদা প্রস্তুত থাকতে হয় পুলিশ
সদস্যদের। অবশ্য নিয়মিত নজরদারির জন্য এখন পুলিশের চেয়ে মানুষ বেশি নির্ভর করে
আধুনিক প্রযুক্তির অন্যতম অবদান ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ওপর। আর অনেক ক্ষেত্রে
আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ কিংবা তদন্তের মতো কাজের জন্য ভবিষ্যতে হয়তো বেশি
ভূমিকা রাখবে রোবট। পুলিশ বা গোয়েন্দা একেবারেই বিলুপ্ত হবে না। তবে তাদের চাহিদা
দিন দিন কমতেই থাকবে, কারণ তাদের কাজ করে দিবে যন্ত্র।
রিয়েল এস্টেট এজেন্ট: খুচরা বিক্রেতাদের ক্ষেত্রে এখনি বড় ভূমিকা পালন করছে ওয়েবসাইট। এর
মাধ্যমেই এখন সংযুক্ত হচ্ছেন ক্রেতা ও বিক্রেতা। এর ফলে ভবিষ্যতে আর কদর থাকবে না
এসব রিয়েল এস্টেট এজেন্ট বা প্রতিনিধির। প্লট, ফ্ল্যাট, বাড়ি-গাড়ি, জমি কেনার জন্য
এখনই অনেকটা অকার্যকর হয়ে পড়েছে এজেন্ট পেশা।-বিবিসি