নির্বাচনে জিততে হলে অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হবে

জাতীয় ঐক্যের অন্যতম
প্রধান নেতা ও জাসদ সভাপতি আ স ম আবদুর রব ১৯৯১ সালে তৎকালীন ঢাকা-১০ আসনে
(তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকা) দাঁড়িয়ে জামানত হারিয়েছিলেন। তিনি পেয়েছিলেন মাত্র ২০৮
ভোট। ঢাকা-১৬ আসনে ১৯৮৬ ও ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েও বিএনপির দুই
প্রার্থী যথাক্রমে এস এ খালেক ও হারুন মোল্লার কাছে পরাজিত হন ড. কামাল হোসেন।
এবার তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের দলের
অন্যতম নেতা কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক।
২০০৮ সালে ঢাকা-১৭ আসনে প্রার্থী হয়ে তিনি পান
মাত্র ২ হাজার ৭৯৭ ভোট। তারও জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। শুধু এই তিন নেতাই নয়, জোট ও
ফ্রন্টের সব শীর্ষ নেতারই একই অবস্থা। বিএনপি জোট-ফ্রন্ট ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে গেলে
তাদের জিতিয়ে আনতে হলে বিএনপিকেই শ্রম-ঘাম ঝরাতে হবে বেশি। জনবল দিয়ে আর্থিক
সহযোগিতা করে মাঠে সক্রিয় থাকতে হবে বিএনপির নেতা-কর্মীদের। আগামী নির্বাচনে
বিএনপি দলীয় প্রতীকও দেওয়া হবে অনেককেই। এ কথা জোট ও ফ্রন্ট নেতাদের একাধিকবার
আকারে ইঙ্গিতে বলেছেও।
তারপরও আগামী ভোটে আসন
চাওয়া পাওয়ার শেষ নেই জোট ও ফ্রন্টের। বিএনপির নীতি নির্ধারকরা জানান, এখনই তারা
আসন ভাগাভাগিতে যাচ্ছেন না। তফসিল ঘোষণা হোক তারপর পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায় এসব
বিষয়ও পর্যবেক্ষণ করবে বিএনপি। যদি নির্বাচনের মোটামুটি অনুকূল পরিবেশ পায় তবেই
নির্বাচনে যাবে তারা। অন্যথায় জোট ও ফ্রন্ট নিয়ে দাবি আদায়ে রাজপথেই থাকবে বিএনপি।
অবশ্য বিএনপির একটি অংশ যে কোনো পরিস্থিতিতে নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে।
সরকার ছাড় দিলে বর্তমান
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেও নির্বাচনে যেতে চায় তারা। তবে আরেক পক্ষ বর্তমান
প্রধানমন্ত্রীর অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার বিপক্ষে। তারা বলছেন, কোনোভাবেই শেখ
হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাওয়া যাবে না। কারণ এ নিয়ে তারা সর্বশেষ স্থানীয় সরকারের
নির্বাচন এমনকি মসজিদ কমিটি গঠনের উদাহরণও সামনে তুলে আনছেন।
আসন ভাগাভাগি প্রসঙ্গে
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা এখন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার
আন্দোলন ও বিএনপি চেয়ারপারসন মুক্তির বিষয়টিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি। আমরা বৃহত্তর
স্বার্থে জাতীয় ঐক্য গঠন করেছি। ২০ দলও আমাদের সঙ্গে আছে। আসন ভাগাভাগির উপযুক্ত
সময় এখন আসেনি। আমরা নির্বাচনে গেলেই না আসন ভাগাভাগির প্রশ্ন আসবে।’
জোটের শরিক এলডিপির চেয়ারম্যান
অলি আহমদ (অব.) বীরবিক্রম বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম
খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে ২০ দল নির্বাচনে যাবে কি না, এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। যখন নির্বাচনে
যাওয়ার কথা হবে, তখন আসন নিয়ে আলোচনা হবে। আমরা এ নিয়ে বিএনপিকে কোনো তালিকাও
দেইনি।’ জানা যায়, ২০-দলীয় জোটের ১২টি দলই নিবন্ধনহীন। তাদের অধিকাংশই ‘এক
নেতার এক দল’। ব্যক্তিগত অফিসকে কিংবা বাণিজ্যিক কার্যালয়কে ‘পার্টি
অফিস’ হিসেবে চালিয়ে দিচ্ছেন।