গ্রামীণফোন ও রবি’র ফাঁকি ১২ হাজার কোটি টাকা

অডিট রিপোর্টের ভিত্তিতে গ্রামীণফোন ও রবির কাছে ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি পাওনার কথা জানিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা চেয়ে মোবাইল ফোন অপারেটর রবিকে ইতোমধ্যে চিঠি দিয়েছে বিটিআরসি। ১১ হাজার ৫৩০ কোটি ১৫ লাখ টাকা পাওনা চেয়ে গ্রামীণফোনকেও চিঠি দিচ্ছে। বিটিআরসির এক কর্মকর্তা বলেন, গত ৩১ জুলাই রবিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ভ্যাট ও ট্যাক্স বাবদ পাওনা টাকা আদায়ে রাজস্ব বোর্ডকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই গ্রামীণফোনেও চিঠি যাচ্ছে। তারা এই টাকা সরকারকে ফাঁকি দিয়েছে। অডিটে যেটা ধরা পড়েছে।
রবির কাছে পাওনা টাকার মধ্যে বিভিন্নখাতে বিটিআরসির নিট পাওনা ৬৭৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা এবং ভ্যাট ও ট্যাক্স বাবদ রাজস্ব বোর্ডের পাওনা রয়েছে ১৮৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আর গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসির পাওনা রয়েছে ১১ হাজার ৫৩০ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে নিট পাওনা ৭ হাজার ৪৪৪ কোটি ২১ লাখ টাকা। বাকি ৪ হাজার ৮৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ভ্যাট ও ট্যাক্স বাবদ পাবে এনবিআর।
চিঠি পাঠানোর ১০ কার্যদিবসের মধ্যে রবিকে টাকা পরিশোধ করতে বলেছে বিটিআরসি। ২০১৬ সালের মার্চে রবির ইনফরমেশন সিস্টেম নিরীক্ষায় স্থানীয় নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান মসিহ মুহিত হক অ্যান্ড কোম্পানি এবং ভারতীয় সহযোগী নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান পি কে এফ শ্রীধর অ্যান্ড সান্থনাম এলএলপি সঙ্গে চুক্তি করে বিটিআরসি। বাংলাদেশে রবির কার্যক্রম শুরুর পর এই প্রথম বিটিআরসি পূর্ণাঙ্গ নিরীক্ষা কার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ নেওয়ার পর সম্প্রতি অডিট কোম্পানি বিটিআরসিতে নিরীক্ষা প্রতিবেদন জমা দেয়। বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, অডিটি সিস্টেম অনুযায়ী অডিট ফার্ম অডিট করেছে। কত পাব, কত পাব না, কেন পাব ডিবেট হয়েছে। পরে ফাইনাল ফিগারটা জানানো হয়েছে। অডিট রুলস অনুযায়ী এ টাকা চাওয়া হয়েছে।
এদিকে রবাির পক্ষ থেকে সংবাদ মাধ্যমে জানানো হয়েছে, ‘রবি এই ত্রুটিপূর্ণ নিরীক্ষা প্রতিবেদন এবং এর সাথে সম্পর্কিত সকল পাওনা দাবিকে জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। সম্পূর্ণ যুক্তিহীন এই দাবির আইনগত ভিত্তি নেই।
অডিট প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গ্রাহক সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অপারেটর গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসির পাওনা রয়েছে ১১ হাজার ৫৩০ কোটি ১৫ লাখ টাকা। বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গ্রামীণফোনের অনেক বড় ব্যাপার, জিপির একবার অডিট হয়েছিল তিন হাজার ৩৪ কোটি টাকা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছিল, হাইকোর্টে মামলা করার পর ফ্রেশ অডিট করতে বলায় সে নির্দেশে অডিট করা হয়েছে। তিনি বলেন, নতুন অডিটে অডিট ফার্ম একটা ফিগার বের করেছে। এটি অনেক দিন হয়ে গেছে, এ জন্য ইন্টারেস্ট হবে। এ নিয়ে ডিবেট হয়েছে। ডিবেট হওয়ার পর যা ফিগার হয়, তা আমাদের বলেছে। এ ফিগার চাওয়া ছাড়া অলটারনেটিভ নেই।