ইদে ঘুরতে আসুন কান্তজিউ মন্দির
By Md. Anamul Haque Milon
2 years ago
957
Asadulah Al Galib
দিনাজপুর প্রতিনিধি
এবারের ইদ অনেক শান্তির মধ্য দিয়ে কাটলো। যেহুতু ইদুল আজহা সেহুতু সবাই নতুন জায়গায় ঘুরাঘুরি করবে কম। তার পরেও যারা ঘুরাঘুরি করতে পছন্দ করেন তাদের জন্য নতুন জায়গায় ঘুরাঘুরি করা অভ্যাস টা এখনও আছে। তো চলুন ঘুরে আসি একটা নতুন জায়গা থেকে! হ্যা বন্ধুরা আজকে আপনাদেরকে একটা নতুন জায়গার সাথে পরিচিত করে দিব, চাইলে এবার ইদে সেখানথেকে ঘুরে আসতে পারেন। সেখানে আসলে যেমন প্রাচীন ঐতিহ্য সম্পর্কে যানা যাবে তেমনি ভ্রমণটাও হবে শান্তি পূর্ণ। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।
আমি যেই যায়গার কথা বলতে চাচ্ছি সেটা হচ্ছে কান্তজিউ মন্দির বা কান্তনগর মন্দির।
দিনাজপুর জেলায় অবস্হিত কান্তজির মন্দির। দিনাজপুর সদর থেকে ১৮ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে অবস্হিত এ মন্দির।
বাংলাদেশের দিনাজপুরে অবস্থিত একটি প্রাচীন মন্দির। এটি নবরত্ন মন্দির নামেও পরিচিত কারণ তিনতলাবিশিষ্ট এই মন্দিরের নয়টি চূড়া বা রত্ন ছিলো। কান্তজীউ মন্দির ১৮ শতকে নির্মিত একটি চমৎকার ধর্মীয় স্থাপনা। মন্দিরটি হিন্দু ধর্মের কান্ত বা কৃষ্ণের মন্দির হিসেবে পরিচিত যা লৌকিক রাধা-কৃষ্ণের ধর্মীয় প্রথা হিসেবে বাংলায় প্রচলিত। ধারণা করা হয়, মহারাজা সুমিত ধর শান্ত এখানেই জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। ২০১৭ সালের কলকাতা বইমেলায় এই মন্দিরের আদলে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন করা হয়। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে এই মন্দির ধ্বংস হওয়ার আগে Ravenshaw, John Henry এর ১৮৭১ সালে তোলা ছবিতে মন্দিরের নয়টি রত্ন বর্তমান।
মন্দিরের উত্তর দিকের ভিত্তিবেদীর শিলালিপি থেকে জানা যায়, তৎকালীন দিনাজপুরের মহারাজা জমিদার প্রাণনাথ রায় তাঁর শেষ বয়সে মন্দিরের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ১৭২২ খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তাঁর পোষ্যপুত্র মহারাজা রামনাথ রায় ১৭৫২ খ্রিস্টাব্দে মন্দিরটির নির্মাণ কাজ শেষ করেন। শুরুতে মন্দিরের চূড়ার উচ্চতা ছিলো ৭০ ফুট।
১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে মন্দিরটি
ভূমিকম্পের কবলে পড়লে এর চূড়াগুলো ভেঙে যায়। মহারাজা গিরিজানাথ মন্দিরের ব্যাপক সংস্কার করলেও মন্দিরের চূড়াগুলো আর সংস্কার করা হয়নি।
ভাস্কার্য
মন্দিরের বাইরের দেয়াল জুড়ে পোড়ামাটির ফলকে লেখা রয়েছে
রামায়ণ , মহাভারত এবং বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী। পুরো মন্দিরে প্রায় ১৫,০০০-এর মতো টেরাকোটা টালি রয়েছে। উপরের দিকে তিন ধাপে উঠে গেছে মন্দিরটি। মন্দিরের চারদিকের সবগুলো খিলান দিয়েই ভেতরের দেবমূর্তি দেখা যায়। মন্দির প্রাঙ্গণ আয়তাকার হলেও, পাথরের ভিত্তির উপরে দাঁড়ানো ৫০ফুট উচ্চতার মন্দিরটি বর্গাকার। নিচতলার সব প্রবেশপথে বহু খাঁজযুক্ত খিলান রয়েছে। দুটো ইটের স্তম্ভ দিয়ে খিলানগুলো আলাদা করা হয়েছে, স্তম্ভ দুটো খুবই সুন্দর এবং সমৃদ্ধ অলংকরণযুক্ত। মন্দিরের পশ্চিম দিকের দ্বিতীয় বারান্দা থেকে সিঁড়ি উপরের দিকে উঠে গেছে। মন্দিরের নিচতলায় ২১টি এবং দ্বিতীয় তলায় ২৭টি দরজা-খিলান রয়েছে, তবে তৃতীয় তলায় রয়েছে মাত্র ৩টি করে।
তাহলে কি ঠিক করলেন? চলে আসুন প্রাচীন নিদর্শন দেখতে কান্তজিউর মন্দির। আর হ্যা আসার সময় ক্যামেরা আনতে ভুলবেন না যেন।